বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলা: ময়নাতদন্তে জটিলতা

অনলাইন ডেস্ক:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলা: ময়নাতদন্তে জটিলতা

 বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত কয়েকটি হত্যা মামলার তদন্তে জটিলতা দেখা দিয়েছে। পুলিশের বিশেষ ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এই মামলাগুলোর তদন্ত করছে। দেখা গেছে, নিহতদের অনেকের ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে, যা তদন্তে সমস্যা তৈরি করছে।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বেশকিছু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মোট ৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেগুলোর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই-কে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, ময়নাতদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এটি না হওয়ায় তদন্তে অনেক সমস্যা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারগুলো আবেগ ও অনুভূতির কারণে পুনরায় ময়নাতদন্তের অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে, ময়নাতদন্ত ছাড়াই মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদ নামের একজন ছাত্র গুলিতে নিহত হন। এরপর আরও অনেক হত্যা ও হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় ১ হাজার ৪৬০টি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে ৬৩১টি ছিল হত্যা মামলা। তবে, এখন পর্যন্ত মাত্র দু’টির অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

পিবিআইয়ের তদন্তাধীন ৭৪টি হত্যা মামলার মধ্যে মাত্র ২০টির ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। বাকি ৫৪টি মামলার ময়নাতদন্ত হয়নি। ময়নাতদন্ত না হওয়ায় অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ময়নাতদন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম শাহজাহান জানান, ময়নাতদন্ত না থাকলেও যদি পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে, তবে মামলার বিচার হতে পারে।

এদিকে, পিবিআই ২ শতাধিক অন্যান্য অভিযোগের মামলাও তদন্ত করছে, যেখানে ৪ হাজার ৮৩০ জন আসামির মধ্যে ৭৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।