জ্বর কমাতে ঘাম: কতটা বিজ্ঞানসম্মত?

অনলাইন ডেস্ক:

জ্বর কমাতে ঘাম: কতটা বিজ্ঞানসম্মত?

জ্বর হলে অনেকেই মনে করেন শরীর থেকে ঘাম বের হলেই বুঝি সুস্থ হয়ে যাবেন। কিন্তু এই ধারণাটি কি আসলেই সত্যি? আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ চিকিৎসাবিজ্ঞানের আলোকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে।

সাধারণত জ্বর ছেড়ে যাওয়ার সময় শরীর ঘামে। এই কারণে অনেকের মাঝে এমন ধারণা প্রচলিত যে, ঘামলেই জ্বর কমে যায়। তাই তারা মোটা কাপড় পরে, রুমের তাপমাত্রা বাড়িয়ে অথবা শারীরিক পরিশ্রম করে ঘাম ঝরাতে চেষ্টা করেন।

জ্বর মানে হলো শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। শরীরের তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি থাকে, তবে তাকে স্বল্পমেয়াদী জ্বর বলা যায়। কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে জ্বর হিসেবে ধরা হয়। আর ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রা হলে তা মারাত্মক জ্বর হিসেবে বিবেচিত হয়।

ঘাম শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে ঠাণ্ডা করে। তাই ঘাম ঝরলে জ্বর কমে যাবে, এমন ধারণা অমূলক নয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের তথ্য অনুযায়ী, জ্বর হলে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘামলে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়, এমন কোনো প্রমাণ নেই। জ্বরের কারণ খুঁজে বের করে তার চিকিৎসা করা জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ‘বিএএসএস মেডিক্যাল গ্রুপ’-এর তথ্য অনুযায়ী, জ্বর হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ। যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোনো ক্ষতিকর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে শনাক্ত করে, তখন শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। অন্যদিকে ঘাম ঝরানো শরীর ঠান্ডা রাখার একটি উপায়। তবে এর মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করা বা অসুস্থতা নিরাময় করা যায় না।

বিজনেস ইনসাইডার-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বর হলে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘামলে তা জ্বর কমাতে বা দ্রুত সুস্থ হতে কোনো সাহায্য করে না। এক্ষেত্রে জ্বরের কারণ জেনে ওষুধ খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা এবং বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। বেশি অসুস্থ বোধ করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

সুতরাং, জ্বর হলে শরীরকে ঘামানোর চেষ্টা না করে, সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।