রাষ্ট্র পুনর্গঠন এবং একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ অবস্থানে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি মনে করেন, গত জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে, তা জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি। আজ শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে এক সংলাপের শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। তিনি জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, "আমরা আশা করি, এ ব্যাপারে আমরা জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাব। আমরা সুনির্দিষ্ট ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা, যা বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।" তিনি আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ জুলাই শেষ হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকা স্বাভাবিক উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্নে এবং একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি দল এবং জোট তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিছু ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবে। কারণ সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও বিনির্মাণের জন্য একত্রিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "আমাদের একটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে। এর মানে এই নয় যে, আমরা সব বিষয়ে একমত হতে পারব। তবে রাষ্ট্র বিনির্মাণ এবং একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা তৈরির জন্য যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রয়োজন, সেখানে আমরা একমত হতে পারব বলে আশা রাখি।" সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের লক্ষ্য হলো একটি সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করা এবং সবাইকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে ঐকমত্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করা ও সেগুলো বাস্তবায়নের পথ খুঁজে বের করা। এটি সবার জন্য প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় উক্ত বৈঠকে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।