বউ রেখে প্রতিবেশীর মেয়েকে নিয়ে পালাল নজরুল

মুজিবুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টারঃ

বউ রেখে প্রতিবেশীর মেয়েকে নিয়ে পালাল নজরুল

কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামে প্রেমের টানে এক বিবাহিত যুবকের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় ড্রাইভার সুমন মিয়ার কিশোরী মেয়ে বিথী বেগমকে নিয়ে ১ মে পালিয়ে যায় একই গ্রামের নজরুল ইসলাম, যার পিতা দুরুদ মিয়া। নজরুল প্রায় সাত মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে সংসার করছিলেন।

বিথীর বাবা সুমন মিয়া বলেন, “আমি সারাদিন প্রাইভেটকার চালিয়ে বাইরে থাকি। সেই সুযোগে নজরুল আমার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করছিলো। এমনকি বাড়ির টিনে ঢিল মারা, উঠানের গাছ কেটে নেওয়া, এসব করেও থামেনি। আমি স্থানীয় গণ্যমান্যদের জানালে কয়েকবার শালিশ হয়, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।”

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, “তারা এখন আমার মেয়েকে জিম্মি করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমার মেয়েকে দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করে আমাকে নিয়ে মিথ্যা ও অশালীন কথা শিখিয়ে বলাচ্ছে। এরপর সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”

বিথীর মা পারুল বেগম বলেন, “আমি ৪ বছর সৌদি আরবে ছিলাম। দেশে ফিরে দেখি নজরুল ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিরক্ত করতো, এমনকি এসিড হামলার হুমকিও দিয়েছে।”

ঘটনার দিন, ১ মে, নজরুল ও বিথী পালিয়ে গেলে বিথীর পরিবার প্রতিবেশী নজরুলের বাড়িতে খোঁজ নিতে যান। এ সময় নজরুলের মা লায়লা বেগম ও বাবা দুরুদ মিয়া গালাগালি ও মারমুখী আচরণ করেন বলে অভিযোগ বিথীর পরিবারের। তাদের দাবি, প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তারা সেদিন রক্ষা পান।

অভিযুক্ত নজরুলের বাবা দুরুদ মিয়া বলেন, “ছেলে যা করেছে, তা মেনে নেওয়া সম্ভব না। সে এখন নিজের কর্মের ফল ভোগ করুক।” নজরুলের মা জানান, “বিথীর সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে দুই লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।”

তবে নজরুলের মা পাল্টা অভিযোগে বলেন, “বিথী আমার ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পর ওর পরিবার আমাকে মারধর করেছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।” কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, “মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি, উভয় পক্ষের মধ্যে শুধু গালাগালি হয়েছে।”

শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রতন বলেন, “মেয়ে ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে, ঘটনাটি সত্য। আমরা সরেজমিন তদন্ত করেছি। তদন্ত চলমান। উভয় পক্ষ চাইলে এলাকার গণ্যমান্যদের মাধ্যমে বিষয়টি আপোষে মীমাংসা করা যেতে পারে।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড়চেগ গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।