সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে যাচ্ছে সরকার। যে ৯টি ধারা নিয়ে সমালোচনা ছিল, সেগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিলের প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই তথ্য জানান। আসিফ নজরুল বলেন, বাতিল হওয়া ৯টি ধারার কারণে ৯৫ শতাংশ হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হতো। তিনি জানান, আইনটি চূড়ান্ত করার আগে ২৫ বার এর খসড়া সংশোধন করা হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর এটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত আইনে অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া নারী ও শিশুর প্রতি যৌন হয়রানিমূলক কনটেন্ট প্রকাশ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো বিষয়গুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। জামিন অযোগ্য ধারাগুলোকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে এবং এসব ধারার অধীনে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আসিফ নজরুল আরও জানান, গেজেট আকারে এই অধ্যাদেশ প্রকাশিত হওয়ার পর সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত সব মামলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। বাতিল হওয়া ধারাগুলো হলো— ২০ ধারা: কম্পিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড ২১ ধারা: মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড ২৪ ধারা: পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ ২৫ ধারা: আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ইত্যাদি ২৬ ধারা: অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার ২৯ ধারা: মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি ৩১ ধারা: আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড ৩২ ধারা: হ্যাকিং-সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড এবং ৫৫ ধারায় মহাপরিচালকের ক্ষমতা অর্পণ-সংক্রান্ত।