বর্ষবরণ শোভাযাত্রায় ঐতিহ্য ও প্রতিবাদের সুর

চব্বিশের বার্তা অনলাইন

বর্ষবরণ শোভাযাত্রায় ঐতিহ্য ও প্রতিবাদের সুর

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল ২০২৫: বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'য় লোকজ ঐতিহ্য, প্রতিবাদ এবং সংহতির বিভিন্ন প্রতীক তুলে ধরা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ৯টায় চারুকলার সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর এবং বাংলা একাডেমি হয়ে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ ছিল একটি দানবীয় প্রতিকৃতি, যা ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ১৬ ফুট উঁচু কাঠামোটি কাঠ, বোর্ড ও থার্মোকল দিয়ে নির্মিত। পূর্বে বাঁশ ও কাগজ দিয়ে তৈরি ২০ ফুট উঁচু একটি কাঠামো আগুনে পুড়ে গেলে এটি প্রতিস্থাপন করা হয়।

গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে 'মুগ্ধ'র পানির বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও, সাদা, কালো ও লাল রঙের সমন্বয়ে '৩৬ জুলাই' শীর্ষক একটি টাইপোগ্রাফি শোভাযাত্রায় স্থান পায়।

ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তরমুজের ফালি একটি বিশেষ মোটিফ হিসেবে প্রদর্শিত হয়, যার ভেতরের রং ফিলিস্তিনের পতাকার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

শান্তির প্রতীক পায়রা, বাঘ, ইলিশ মাছ ও পালকির মতো লোকজ সংস্কৃতির উপাদানও শোভাযাত্রায় দেখা যায়। এগুলি ঠেলাগাড়ির ওপর স্থাপন করা হয়েছিল।

অন্যান্য আকর্ষণীয় মোটিফের মধ্যে ছিল সুলতানি ও মুঘল আমলের শাসকদের মুখোশ, তালপাতার সেপাই, রঙিন চরকি, পাখা, ঘোড়া, তুহিন পাখি এবং ১০০ ফুট উচ্চতার লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস।

ছোট আকারের মোটিফ হিসেবে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, বাঘের মাথা, পলো, মাছের চাই, মাথাল, লাঙল ও মাছের ডোলাও প্রদর্শিত হয়। শোভাযাত্রার আগে পুলিশ বাহিনীর সুসজ্জিত ঘোড়ার সারি ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। নববর্ষকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।