দেশে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রাথমিকভাবে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রুটে সমীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে, প্রকল্পের শেষ মুহূর্তে এসে আরও দুটি নতুন সেকশন যোগ হওয়ায় প্রকল্পের সময়সীমা তৃতীয়বারের মতো বাড়ানো হতে পারে রেলওয়ে সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ৩৩৬.৮৯ কিলোমিটার এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ১১.২৭ কিলোমিটার। এই দুটি রুট মিলিয়ে ৩৪৮ কিলোমিটার রেলপথকে বৈদ্যুতিক ট্র্যাকশনের আওতায় আনার জন্য সমীক্ষা চলছে। বর্তমানে, এর সাথে চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে ফৌজদারহাট এবং পুবাইল থেকে ধীরাশ্রম পর্যন্ত আরও ১৭.৪ কিলোমিটার অংশ যুক্ত করা হয়েছে। ফলে, এখন মোট ৩৬৫.৪ কিলোমিটার রেলপথের উপর সমীক্ষা চালানো হবে। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার তথ্য অনুযায়ী, ইলেকট্রিক ট্র্যাকশনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ডিটেইলস ডিজাইন প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেলওয়ে তা সময়মতো শুরু করতে পারেনি। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল আট কোটি টাকা। পরবর্তীতে, ২০২৩ সালের ১৫ জুন তুরস্কের প্রতিষ্ঠান তুমাস তুর্কি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাথে সমীক্ষার চুক্তি হয়। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। পরে, প্রকল্পের মেয়াদ প্রথম দফায় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত করা হয়। নতুন করে আরও দুটি সেকশন যুক্ত হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে, এই সময়ের মধ্যেও সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকায়, মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত পিইসি সভায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও চার মাস বাড়িয়ে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের পরিধি বাড়ায় পরামর্শক সেবার ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বে প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৫ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা বেড়ে এখন ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান জানান, মেয়াদ বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এখনো অনুমোদিত হয়নি। নতুন করে দুটি অংশে আরও ১৭ কিলোমিটার যুক্ত হওয়ায় এবং কিছু কাজ বাকি থাকার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হয়েছে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, বৈদ্যুতিক রেললাইনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজটি খুব জটিল কিছু নয়। রেললাইনের দুই পাশে পর্যাপ্ত জায়গা আছে কিনা, তা সার্ভে করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে, বারবার সময় বাড়ানোয় প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা নষ্ট হয় এবং জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।