আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিদ্যমান ৩০০ আসন বহাল রেখে আইনি কাঠামো অনুসরণ করে এই প্রক্রিয়া চলছে। ইসি সূত্র জানায়, জনসংখ্যার পরিবর্তন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা এবং ভৌগোলিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এতে শহরের আসন কিছু কমতে পারে, বিপরীতে গ্রামাঞ্চলে আসন বাড়তে পারে। সম্প্রতি, সরকার এ সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে, যার ফলে ইসি এখন দ্রুততার সাথে কাজ করছে। জমা পড়া আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রাপ্ত আবেদনগুলো যাচাই করা হচ্ছে। আবেদনকারীদের দেওয়া যুক্তির মধ্যে যেগুলো গ্রহণ যোগ্য, সেগুলো বিবেচনা করা হবে।’ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৬৬টি আসন থেকে ৪১৭টি আবেদন জমা পড়েছে, যেখানে অধিকাংশই ২০০১ সালের সীমানায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, কোন কোন বিষয়গুলো সীমানা পুনর্নির্ধারণে প্রাধান্য দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পূর্বে, ইসি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে আপত্তি ও অভিযোগের সুযোগ দিত, কিন্তু এবার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০৮ সালে কিছু আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, যা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে করা হয়েছিল। কাজের সুবিধার্থে, ২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আসনগুলোতে কী পরিবর্তন হয়েছে, তার একটি তুলনামূলক চিত্র তৈরি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে আগে দুটি আলাদা আসন ছিল, যা পরবর্তীতে এক করা হয়েছে। এখন এই আসন দুটিকে পুনর্বহালের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় যুবদল নেতা মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, ‘দোহার ও নবাবগঞ্জ ঐতিহাসিকভাবে প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভিন্ন ছিল। দুটি আসনকে একীভূত করায় এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ কমে গেছে।’ সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা হাজী জামাল উদ্দিন সরকার জানান, ২০০৮ সালে তাদের ইউনিয়নকে ঢাকা-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, যা প্রশাসনিকভাবে সাভারের অংশ হওয়া সত্ত্বেও। তিনি ইউনিয়নটিকে পুনরায় সাভার আসনের সাথে যুক্ত করার দাবি জানান। ইসি সূত্র জানায়, ঢাকায় আসন সংখ্যা বাড়ায় অন্যান্য জেলার আসন কমেছে, তাই শহরের আসন কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যেসব আসন থেকে সীমানা পুনর্নির্ধারণের আবেদন এসেছে, সেগুলোর মধ্যে ঢাকা-১, ২, ৭, ১২, ১৬ ও ১৯; নারায়ণগঞ্জ-১, ২, ৩, ৪ ও ৫; গাজীপুর-৩; মানিকগঞ্জ-২ ও ৩ উল্লেখযোগ্য।