ঢাকা, ১৪ এপ্রিল ২০২৫: পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রাকে শুধু বাঙালির নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আজ সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় অংশ নিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে এ কথা জানান। ফারুকী বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে নববর্ষের উৎসবকে শুধু বাঙালির উৎসব হিসেবে পালন করে এসেছি। তবে এখন এটি শুধু বাঙালির নয়, বরং বাংলাদেশের সকল জাতিগোষ্ঠীর উৎসব। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এই দিনে বর্ষবরণ করে। তাই এখন থেকে এটি বাংলাদেশের উৎসব হিসেবে পালিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি মনে করি, এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য ও সংহতির পথে একটি বড় পদক্ষেপ। হয়তো ২০-৩০ বছর পর আমরা থাকব না, কিন্তু আজকের এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এরপর থেকে বাংলাদেশ এভাবেই এগিয়ে যাবে।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ বলেন, “এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমরা একটি মুক্ত পরিবেশে একত্রিত হয়েছি। কিছু বাধা ও ষড়যন্ত্র ছিল, তবে আল্লাহর রহমতে আমরা তা অতিক্রম করতে পেরেছি। আজকের দিনে কারো প্রতি কোনো বিদ্বেষ নেই। আমরা অতীতের দিকে না তাকিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের সামনে নতুন সুযোগ এসেছে, যেখানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, জাতি, ধর্ম, পেশা নির্বিশেষে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।” সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চারুকলার সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। এটি শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনে দিয়ে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, ব্যান্ড দল, কৃষক, রিকশা চালক ও ঘোড়ার গাড়ির দল অংশ নেয়। এছাড়াও সাঁওতাল, মারমা, গারো, খাসিয়া, তঞ্চঙ্গ্যাসহ ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রার শুরুতে ছিল ডিএমপির অশ্বারোহী দল, র্যাব, পুলিশের সোয়াট টিম ও প্রক্টরিয়াল টিম। এরপর ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের র্যালি ছিল। শোভাযাত্রায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মোটিফ ও লোকজ সংস্কৃতিকে ধারণ করে বানানো একটি বিশাল পটচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।