জেট ফুয়েলের দাম কমালো বিইআরসি, আজ রাত থেকে কার্যকর

অনলাইন ডেস্ক:

জেট ফুয়েলের দাম কমালো বিইআরসি, আজ রাত থেকে কার্যকর

 উড়োজাহাজের জ্বালানি তেলের (জেট ফুয়েল) দাম কমেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক রুটে জেট ফুয়েলের দাম লিটার প্রতি ৭৫ সেন্ট থেকে কমিয়ে ৬০ সেন্ট করা হয়েছে। অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতি লিটার ১১১ টাকা থেকে কমিয়ে ৯৩.৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগে এই দাম নির্ধারণ করত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। অভিযোগ ছিল, বাংলাদেশে জেট ফুয়েলের দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেক বিদেশি উড়োজাহাজ ট্রানজিট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করত না। অথচ, ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করলে দেশের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হতো এবং আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হতো।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নতুন এই দাম আজ রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। তবে আমদানি মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতি মাসে দাম সমন্বয় করা হবে। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে, কমলে কমবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির সদস্য মিজানুর রহমান, সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, আব্দুর রাজ্জাক ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহিদ সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের নিয়ম বাতিল করে দেয়। এরপর গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল ও জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব বিইআরসিকে দেওয়া হয়। এরপর ২৩ মার্চ বিইআরসি প্রথম জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের জন্য গণশুনানি করে। সেই সময় বিপিসি আন্তর্জাতিক রুটের জন্য লিটারে ১ সেন্ট কমানো এবং অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য ১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল।

বিপিসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেট ফুয়েল বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৫ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ টনে।

২০০৩ সালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের মাধ্যমে বিইআরসি গঠিত হয়। আইনে সব ধরনের জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হলেও, প্রবিধানমালা না থাকায় এতদিন শুধু গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করত এই সংস্থা। পরবর্তীতে, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আইন সংশোধন করে নির্বাহী আদেশে দাম সমন্বয়ের বিধান যুক্ত করে। এতে বিইআরসির কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার সেই ধারাটি বাতিল করার পর সংস্থাটি আবার সক্রিয় হতে শুরু করে। বর্তমানে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্বাহী আদেশেই নির্ধারিত হচ্ছে।

যে প্রবিধানমালার অজুহাতে এতদিন জ্বালানি তেলের দাম নির্বাহী আদেশে নির্ধারণ করা হচ্ছিল, সেই প্রবিধানমালা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ২০১২ সাল থেকে ঝুলে থাকা প্রবিধানমালা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে কিছুটা নড়াচড়া করলেও এখন তা আবারও চাপা পড়ে গেছে।