খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর ৩৭ শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসাথে, বুধবার বিকেল থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ৭টি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। কুয়েটের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ১৪ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যা আজ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রদের জন্য ৬টি এবং ছাত্রীদের জন্য ১টি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো পুনরায় শুরু হবে। এদিকে, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় আন্দোলনরত কুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েটে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি মনোযোগ দিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের অনশন ভেঙে আইনের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তারা দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এসময় তিনি অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথেও কথা বলেন। তবে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারেনি এবং কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তিন সদস্যের একটি কমিটি সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছে। কুয়েট শিক্ষক সমিতি জানিয়েছে, উপাচার্যের উপর চাপ প্রয়োগ করে তাকে অপসারণ করা হলে তা তারা মেনে নেবে না। তারা সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। শিক্ষকরা আরও জানান, শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও শিক্ষকদের সাথে কোনো আলোচনা করেননি, যা তাদের হতাশ করেছে। বুধবার দুপুরে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষক সমিতির নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিগত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।