সিঙ্গাপুর ম্যাচে ফেভারিট বাংলাদেশ: বলছেন বিশেষজ্ঞরা

অনলাইন ডেস্ক:

সিঙ্গাপুর ম্যাচে ফেভারিট বাংলাদেশ: বলছেন বিশেষজ্ঞরা

অভিজ্ঞ ফুটবলারদের মতে, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচে বাংলাদেশ দলই ফেভারিট।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে গভীর রাতে বাফুফে ভবনের সামনে আল্ট্রাসের সদস্যদের অবস্থান, যা জামাল ভূঁইয়ার ফেসবুক পেজে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত।

হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি দেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনা এনেছে। তার ইতিবাচক ভাবনা ও পরিকল্পনাগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ এখন এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে। বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে কোনো দলই জয় পায়নি। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছে, অন্যদিকে সিঙ্গাপুর হংকংয়ের সঙ্গে ড্র করে ১ পয়েন্ট অর্জন করেছে। আগামী ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, যা সাবেক ফুটবলারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

সিঙ্গাপুর দলে দু'জন খেলোয়াড় আছেন, যাদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা একশ'র বেশি। র‍্যাঙ্কিংয়ে সিঙ্গাপুরের অবস্থান ১৬১, যেখানে বাংলাদেশ রয়েছে ১৮৩ নম্বরে। তবে জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি মনে করেন, র‍্যাঙ্কিং যাই হোক, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের জয় পাওয়া উচিত। তিনি বলেন, 'তিন পয়েন্ট অবশ্যই সম্ভব। বাংলাদেশ এখন শক্তিমত্তার দিক থেকে ভালো খেলছে। ভারতের বিপক্ষে প্রথমার্ধে তারা দারুণ খেলেছে এবং কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছিল। এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয় পাওয়া সম্ভব।' এমিলি আরও মনে করেন, সিঙ্গাপুরের সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো না থাকায় বাংলাদেশ এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে।

সিঙ্গাপুর ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ ৩১ মে থেকে অনুশীলন শুরু করেছে। ইতালিতে বসবাস করা ফাহামিদুল ইসলাম প্রথম দিন থেকেই সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। এমিলি মনে করেন, ফাহামিদুল, রাকিব হোসেন ও আল আমিন—এই তিনজনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া তৈরি হবে। তার মতে, উইঙ্গার ও স্ট্রাইকার হিসেবে ফাহামিদুলের মধ্যে প্রয়োজনীয় সব গুণাবলি রয়েছে। কোচ যদি তাকে সঠিক পজিশনে খেলাতে পারেন, তাহলে তার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এই তিনজনই গোল করতে পারদর্শী এবং তাদের মধ্যে একটি ভালো সমন্বয় দেখা যেতে পারে।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ৪ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে ভুটানের সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। সাবেক গোলরক্ষক ও অধিনায়ক বিপ্লব ভট্টাচার্য এই ম্যাচে কানাডাপ্রবাসী মিডফিল্ডার শমিত শোমকে দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ভুটান ম্যাচে এই তিন খেলোয়াড়কে একসঙ্গে খেলাতে পারলে ভালো একটি কম্বিনেশন তৈরি হতো। ফাহামিদুল অবশ্য হামজার সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে, যা দলের জন্য ইতিবাচক। তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মিডফিল্ড বেশ শক্তিশালী।

বিপ্লব ভট্টাচার্য মনে করেন, এখন সময় এসেছে ফুটবলে নতুন জাগরণ আনার। তিনি বলেন, 'আমি চার প্রজন্ম ধরে ফুটবল খেলেছি। নব্বইয়ের দশকে ফুটবলের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী ছিল, কিন্তু আমরা তেমন সাফল্য আনতে পারিনি। ২০১০ সালের পর থেকে ফুটবলে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তবে হামজার মতো খেলোয়াড় আসার পর আমরা নতুন করে ভাবতে শুরু করেছি। দর্শকেরা আবার স্বপ্ন দেখছে, এবং এই আশা ধরে রাখতে হলে আমাদের ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যেতে হবে।'

বিপ্লবের বিশ্বাস, সিঙ্গাপুর ম্যাচ দেশের ফুটবলকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, হামজা, শমিত ও ফাহামিদুল—তারা সবাই প্রথমবার জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলবে, তাই দর্শকদের মধ্যে ম্যাচটি দেখার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তার ধারণা, এই ম্যাচটি দেশের ফুটবলকে নতুন দিগন্তে উন্মোচন করবে।