পরিচালনার অভাবে স্থবির ৮ হাজার কোটির জ্বালানি তেল প্রকল্প

অনলাইন ডেস্ক:

পরিচালনার অভাবে স্থবির ৮ হাজার কোটির জ্বালানি তেল প্রকল্প

 বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের জন্য প্রায় ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি প্রকল্প প্রায় এক বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রকল্পটি বুঝে নেওয়ার প্রায় ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে জটিলতার কারণে এর সুফল এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।

‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ (এসপিএম) নামের এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জিটুজি চুক্তির অধীনে নির্মিত হয়েছে। এটি চালু হলে গভীর সমুদ্র থেকে ১১০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরাসরি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পৌঁছানো সম্ভব হতো। এতে পরিবহন সময় ১০-১২ দিন থেকে কমে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় নেমে আসত এবং বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হতো।

কিন্তু প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করা না যাওয়ায় এটি এখন অলস পড়ে আছে, যার ফলে মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির পর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। তবে, নানা কারণে প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় দুটোই বৃদ্ধি পায়।

২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়ায় ট্যাংক টার্মিনালে আনা হয়েছিল। এরপর মার্চ মাসে আরেকটি পাইপলাইনে ৩০ হাজার টন ডিজেল পরিবহন করা হয়।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশি অপারেটর নিয়োগে বিলম্বের কারণে প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং নির্মাণকাজ শেষ করলেও চুক্তিতে অপারেশনাল প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী মাসুদ করিম জানান, প্রকল্পের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্সের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। তবে, নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে এবং আশা করা যাচ্ছে যে, চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে বাণিজ্যিক অপারেশনে যাওয়া সম্ভব হবে।

এসপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ৪৫ লাখ টন ডিজেল এবং সমপরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সঞ্চালন করা সম্ভব। এর বিপরীতে, দেশে বর্তমানে বার্ষিক পরিশোধন ক্ষমতা রয়েছে মাত্র ১৫ লাখ টন।