কাশ্মীরে হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক এক হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে। কাশ্মীর হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে এবং তাদের ভিসা বাতিল করেছে। ভারতে বসবাসরত পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাতিল করা হয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে? ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্রধারী। পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম বেশ শক্তিশালী। দেশটির ভ্রাম্যমাণ ছোট ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভারতের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) তথ্য অনুযায়ী, শাহিন-২ নামের পাকিস্তানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটার বা ১ হাজার ২৪২ মাইল। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের ১৪০-১৫০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, যেখানে ভারতের রয়েছে ১৩০-১৪০টি। ভারতের নয় ধরনের সক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে অগ্নি-৩ এর পাল্লা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র সিএসআইএসের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বিমান বাহিনীতে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ জন কর্মী এবং ৮১৪টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। তবে, যুদ্ধ জেটের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। পাকিস্তানের ৪২৫টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে চীনের তৈরি এফ-৭পিজি এবং আমেরিকান এফ-১৬ ফ্যালকন উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তানের সাতটি বায়ুবাহিত পূর্ব সতর্কতা ও নিয়ন্ত্রণ বিমান রয়েছে, যা ভারতের চেয়ে তিনটি বেশি। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) তথ্যমতে, ভারতীয় সেনারা নতুন মারাত্মক স্নাইপার রাইফেল এলওসি পেয়েছে। নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে, পাকিস্তানের ৯টি ফ্রিগেট, ৮টি সাবমেরিন, ১৭টি সামুদ্রিক যুদ্ধজাহাজ এবং ৮টি যুদ্ধক্ষমতাসম্পন্ন বিমান রয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের নৌবাহিনীতে একটি বিমান বহনকারী, ১৬টি সাবমেরিন, ১৪টি সাবমেরিন বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ১৬টি উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ ও ৭৫টি যুদ্ধক্ষমতাসম্পন্ন বিমান রয়েছে। দেশটির নৌবাহিনীতে ৬৭ হাজার ৭০০ জন কর্মী রয়েছে। কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।