আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাজিরা দিতে এসে পুলিশ সদস্যদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম ও জিয়াউল আহসান। গতকাল রবিবার ট্রাইব্যুনালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'তোমরা আমাদের হ্যান্ডকাফ পরাতে এসেছ? রাজাকারের বাচ্চা, তোদের চৌদ্দগোষ্ঠী আমি দেখে নেব। আমাদের ছেলেরা তোদের মনে রাখবে। তোদের সব কুকর্মের হিসাব রাখা হচ্ছে।' একই সুরে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং গুম-খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানও পুলিশ সদস্যদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সময় হ্যান্ডকাফ পরানোকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী হ্যান্ডকাফ পরানোর বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। আদালত দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল ও নুরুন্নবীর কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, শাজাহান খান, হাসানুল হক ইনু ও জিয়াউল আহসান তাদের এবং তাদের পরিবার সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দিয়েছেন। তাদের আচরণ ছিল উদ্ধত। এ সময় শাজাহান খান দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাকে হ্যান্ডকাফ পরানো অমর্যাদাকর। পুলিশ সদস্য নুরুন্নবী জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিদের এভাবে হাজির করা হয়েছে। শহীদুল আরো বলেন, প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সময় তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলা হয়েছে এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ইনু হাজতখানায় এসে মিটিং করে পুলিশ সদস্যদের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়। তবে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান এবং কামরুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, কোনো আসামি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। একই সাথে পুলিশকেও বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এটি আইনের প্রতি আসামিদের চরম অবজ্ঞা। ঘটনার দিন ইনু ও শাজাহান খানকে ইস্ত্রি করা পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। আদালত শেষে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের লক্ষ্য করে পচা ডিম ছোড়ে।