দিল্লির উপর নতুন চাপ: হাসিনা ইস্যু ভারতের বহুরূপী নাটকের পর অনুষ্ঠিত ইউনূস-মোদি বৈঠক হাসিনা ইস্যুতে দিল্লিকে নতুন কূটনৈতিক চাপের মুখে ফেলবে। বহুল আলোচিত এই বৈঠকে হাসিনা প্রত্যর্পণের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট ভাষায় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যায় অভিযুক্ত। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূসের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের কূটনৈতিক সক্ষমতার পরিচয় দেয়। তারা মনে করেন, হাসিনা ফেরত পাঠানো হবে কিনা, তা ভবিষ্যতের বিষয়। তবে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ইস্যু যেভাবে তুলে ধরেছেন, তা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ইতিবাচক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আতাউর রহমান এই বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, বেইজিংয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক বাংলাদেশের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ। এর মাধ্যমে ড. ইউনূস ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছেন। ড. আতাউর রহমান আরও বলেন, হাসিনা ফেরত পাঠানোর বিষয়টি এখনই ঘটবে না। তবে ড. ইউনূস প্রথম বৈঠকেই বিষয়টি উত্থাপন করে ভারতকে চাপের মধ্যে রেখেছেন। ভবিষ্যতে হাসিনার বিচার ও সাজা হলে ভারত আরও চাপে পড়বে। ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের কাছে এটি একটি দুর্বল যুক্তি। পশ্চিমা দেশগুলোও এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে একমত নয়। ইউনূস-মোদি বৈঠক ইতিবাচক উল্লেখ করে ড. আতাউর রহমান বলেন, হাসিনার পতনের পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, তা কমানোর সুযোগ তৈরি হবে। দুই দেশের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক জনগণের স্বার্থেই প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. এম শহীদুজ্জামানও এই বৈঠককে ইতিবাচক মনে করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করবে। হাসিনা পরবর্তী সময়ে ভারতের বৈরী আচরণ থেকে সরে আসা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে। ড. শহীদুজ্জামান আরও বলেন, হাসিনা ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দিল্লির অনীহা রয়েছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না হলে ভারত ভূ-রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রও চায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক উন্নত হোক। গতকালের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদির ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। এখন সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি বণ্টনসহ দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে ভারতের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।