আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন প্রক্রিয়ায় প্রবাসীদের ভোট নেওয়া হবে, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ অনেক দল এখনো তাদের মতামত জমা দেয়নি। ইসি সূত্রে জানা গেছে, মতামত দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ১৫ মে। তবে রোববার পর্যন্ত (২৬ মে ২০২৫) পর্যন্ত ১৩টি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা ভোটাধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই প্রেক্ষাপটে ইসি পোস্টাল ব্যালট, প্রক্সি ভোট, নাকি অনলাইন ভোটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোট গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ নিচ্ছে। পাশাপাশি, কমিশন বিভিন্ন দেশে ভোট গ্রহণের পদ্ধতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, 'এখন পর্যন্ত ১৩টি দল প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পদ্ধতি নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা আশা করছি, আরো কিছু মতামত পাওয়া যাবে। আগামী সপ্তাহে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে বসব। কোনো দল তিনটি পদ্ধতি ব্যবহারের কথা বলেছে, আবার কেউ দুটি পদ্ধতির কথা বলেছে। তবে বেশিরভাগ দল একাধিক পদ্ধতি ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে।' কোন কোন দল মতামত দিয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া যাবে।' এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি, যারা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবে, তাদের ভোটার করার কাজ শুরু করা হোক। আমরা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি কথা বলেছি। প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি তাদের জন্য সবচেয়ে সুবিধা হবে, সে বিষয়ে আমরা তাদের মতামত নিচ্ছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুতই আমরা আমাদের মতামত কমিশনকে জানাব।' তিনি আরো বলেন, 'প্রবাসীদের ভোটার করা বেশি জরুরি। ভোটার না করলে কোন পদ্ধতিতে ভোট নেবেন? তাই আমরা কমিশনকে অনতিবিলম্বে প্রবাসীদের ভোটার করার কথা বলেছি।' জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, 'আমরা খুব শিগগিরই মতামত জমা দেব। সেটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আমরা প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে লিখিত দাবি জানিয়েছি।' জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, 'আমরা এখনো মতামত জমা দিইনি। এটি প্রস্তুত করতে আমাদের আরো কিছু সময় লাগবে।' উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে প্রবাসীদের ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করে ইসি। সেখানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২১টি দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই সেমিনারে দলগুলোকে ১৫ মের মধ্যে মতামত দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের পর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে গত ৮ এপ্রিল ইসি কারিগরি বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ভোট পদ্ধতি নিয়ে একটি কর্মশালা করে। সেখানে তিনটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এরপর ইসি সচিবালয় ভোট-সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে একটি 'অ্যাডভাইজরি টিম' গঠন করে। এমআইএসটি, ঢাবি ও বুয়েট তিনটি পদ্ধতি নিয়ে কমিশনে তিনটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।