ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের প্রায় দুই বছরের আগ্রাসন সেখানকার ঈদ আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। খাবার ও জরুরি রসদের অভাবে এবারের ঈদুল আজহায় গাজাবাসীর কপালে কোরবানি তো দূরের কথা, সামান্য মাংসও জুটবে না। এই দীর্ঘ সময়ে গাজায় ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং সোয়া লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরায়েল শুধু হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই থামেনি, অবরুদ্ধ করে রেখেছে গাজার সবকিছু। ফলে খাদ্য, ওষুধসহ কোনো জরুরি সামগ্রী সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। এমনকি কোরবানির জন্য পশুও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও কঠোর অবরোধের কারণে গাজায় ঈদুল আজহার প্রস্তুতি একেবারেই স্তিমিত হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় একটানা হামলা চালাচ্ছে। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে সেখানে আরও কঠোর অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিরা দ্বিতীয়বারের মতো ঈদুল আজহা পালন করতে যাচ্ছেন। ইসরায়েল খাদ্যকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করায় গাজায় চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। আবু হাতিম আল-জারকা নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে কোনো পশু গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি। নিজের পালের জন্য পর্যাপ্ত পানিও পাচ্ছেন না তিনি। আল-জারকা আরও বলেন, বাজারে যে অল্পসংখ্যক পশু পাওয়া যাচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে তারা চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন, তাই ঈদের আনন্দ তাদের জন্য অর্থহীন। ইসরায়েলের তৈরি করা দুর্ভিক্ষে মাংস ও সবজির দাম এতটাই বেড়েছে যে, অনেকের পক্ষেই কেনা সম্ভব হচ্ছে না। মাসের পর মাস ধরে তারা মাংসের স্বাদ নিতে পারছেন না।